বিভিন্ন দেশের মধ্যে কেন সব সময় যুদ্ধ লেগে থাকে
Loading...

বিভিন্ন দেশের মধ্যে কেন সব সময় যুদ্ধ লেগে থাকে
পৃথিবীতে বর্তমানে ১৯৫টি দেশ আছে। এর মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য। সব দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নেই। কেন নেই? কিসের জন্য এক দেশ আরেক দেশের সঙ্গে শত্রুতা করে? সব দেশই তো শান্তি চায়। সব দেশের মানুষই শান্তিতে বসবাস করতে চায়। তবু কেন এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের যুদ্ধ লাগে?
এর পেছনে মূলত তিনটা কারণ দায়ী। স্বল্পতা, অসম বণ্টন ও ভুল বোঝাবুঝি।
কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন
Loading...
প্রথমেই আসা যাক স্বল্পতার কথায়। পৃথিবীতে সবার জন্য যথেষ্ট জিনিস খাবার, তেল বা পানি নেই। এই অভাবের কারণেই দেশগুলোকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
তারা ঠিক করে নেয়, কোন জিনিসটা তাদের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকারি। মিসরের নীল নদের কথাই ধরা যাক। এই একটা নদের পানির ওপর ভরসা করে আফ্রিকার ১১টা দেশের ৩০ কোটি মানুষ!
Loading...
সব দেশই চায় সেই নদের পানি। কেউ হয়তো নীল নদের পানি দিয়ে চাষাবাদ করবে, কেউ পান করবে আবার কেউ হয়তো বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। পানি যেহেতু কম, তাই মিসর আর ইথিওপিয়ার মতো দেশগুলো প্রায়ই এই পানি নিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে ফেলে। একই কথা বাংলাদেশ ও ভারতের জন্যও খাটে। তিস্তার পানি নিয়ে প্রায়শই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিবাদ লাগে।
এরপর আসা যাক দ্বিতীয় কারণে। সেটা হলো অসম বণ্টন। মানে সবার হাতে সমান ক্ষমতা বা সম্পদ নেই। কিছু দেশ খুব শক্তিশালী, আবার কিছু দেশ ততটা নয়। এই বৈষম্য দেশগুলোর একে অপরের প্রতি আচরণ বা ঝুঁকি নেওয়ার হিসাবটাই বদলে দেয়।
যেমন, যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। এই একচেটিয়া ক্ষমতা দেখে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত বা চীনের মতো দেশগুলো একটু চিন্তায় পড়ে গেছে। কিন্তু এভাবে তো চলতে দেওয়া যায় না। তাই এসব দেশ মিলে ২০০৯ সালে নিজেদের একটা জোট তৈরি করল। সেই জোটের নাম BRICS+। ক্ষমতা যাতে ভারসাম্যে থাকে, তাই এই জোট বানানো।
Loading...
তৃতীয়ত, দৃষ্টিভঙ্গি বা ভুল বোঝাবুঝি। বিবাদ লাগার সবচেয়ে মজার কারণটা হলো এই ভুল বোঝাবুঝি। ধরো, ‘ক’ নামে একটি দেশ ভাবল, ‘আমার নিরাপত্তা দরকার’। এই ভেবে দেশটি কিছু অস্ত্র বানাল।
কিন্তু তার প্রতিবেশী ‘খ’ দেশ ভাবল, ‘ও তো আমাকে আক্রমণ করার জন্য অস্ত্র বানাচ্ছে! তাহলে আমাকেও অস্ত্র বানাতে হবে।’ ব্যস, ‘খ’ দেশও ভয়ে ভয়ে আরও বেশি অস্ত্র বানানো শুরু করল।
কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর
Loading...
ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছিল ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে। ১৯৭০-এর দশকে ভারত যখন নিজের সুরক্ষার জন্য পারমাণবিক বোমা বানাল, পাকিস্তান ভাবল এটা তাদের জন্য হুমকি। ফলে পাকিস্তানও পারমাণবিক বোমা বানিয়ে ফেলল। আর সেই থেকে দুটো দেশের মধ্যে রেষারেষি লেগেই আছে।
এবার সম্পূর্ণ বিষয়টা বোঝার জন্য একটা গল্প বলি। ধরো, রনি ও জনি খুব ভালো বন্ধু। ক্লাসের টিচার তাদের দুজনকে দুটো আলাদা দলের নেতা বানিয়ে দিলেন। ক্লাসের বাকিরাও অন্য দলের নেতা হলো। খেলাটা হলো, কার হাতে কত পয়েন্ট আছে, কে কত শিল্প বানাতে পারে এবং কে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে।
Loading...
খেলাটায় একটা সমস্যা ছিল। খেলার পয়েন্ট সীমিত। সবাইকে তাদের দরকারি জিনিস সেই পয়েন্ট দিয়ে বেছে নিতে হবে। খেলা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই দেখা গেল, দুই ভালো বন্ধু রনি ও জনি আর একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছে না! অথচ তারা কিন্তু ভালো বন্ধু ছিল। এখন একজন অন্যজনকে টেক্কা দেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা শুরু করেছে।
Loading...
এই ক্লাসরুমের খেলাটাই হলো পুরো পৃথিবীর চিত্র। দেশগুলো সবাই হয়তো শান্তিই চায়। কিন্তু ওই যে অভাব, বৈষম্য আর ভুল বোঝাবুঝি আছে; এ জন্য সবার পক্ষে সব সময় মিলেমিশে থাকা সম্ভব হয় না।
তবে হ্যাঁ, এই সত্যিটা যদি সবাই বুঝতে পারে, এই কারণগুলো যদি জানতে পারে, তাহলে হয়তো দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বাস বাড়ানো সহজ হবে। আর তখনই শান্তি আসলেও আসতে পারে!
ফেসবুকে আমাদের সাথে থাকতে লাইক দিন এখানে
Loading...
আরো পড়ুন
Loading...






